আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি :
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল বাশারের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে আহত শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে গত ১২ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আবু মো. তাজ্জীদ উদ্দীন প্রতিদিনের মতো সেদিনও বিদ্যালয়ে যায়। শ্রেণিকক্ষের বাইরে খেলাধুলার সময় সামান্য দুষ্টুমি করায় প্রধান শিক্ষক নুরুল বাশার তাকে ডেকে নিয়ে কক্ষে ডেকে মারধর করেন। একপর্যায়ে বমি করতে করতে শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে দ্রুত তাকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
পরবর্তীতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কক্সবাজার ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আহত শিক্ষার্থীর মা দিলু আরা বেগম।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আখতার উদ্দিন বলেন, “উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে অভিযোগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “দিলু আরা বেগম নামে এক অভিভাবক আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যেহেতু বিষয়টি শিক্ষকের বিরুদ্ধে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল বাশার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি শুধু শাসন করেছি, মারধর করিনি। যদি প্রমাণ করতে পারে, তার চিকিৎসার সমস্ত খরচ আমি বহন করব।”
স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই প্রধান শিক্ষক পূর্বেও একাধিকবার শিক্ষার্থীদের মারধর করেছেন। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি সবসময় শাস্তি এড়িয়ে গেছেন বলে দাবি করেন তারা। এলাকাবাসী ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্ত শিক্ষকের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।
